করোনায় কর্মক্ষেত্র কেমন ছিল
করোনার দিনগুলোতে কিভাবে অফিসে যাব এবং ছাত্রদের ক্লাস নিব এটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জেবল ছিল কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট করোনার কিছু আগে বুঝেছিল যে সারা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে । তাই জনাব সবুর খানের(চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে ড্যাফোডিল ফ্যামিলি একটি ওয়ার্কশপ আয়োজন করেছিল । যেখানে গ্রপের অধীনস্থ প্রত্যেক কন্সসারন এর সদস্যরা অংশগ্রহণ করেছিল । ওয়ার্কশপ টি পরিচালনা করেছিল ডক্টর ইউসুফ এম ইসলাম ড্যাফোডিল ইন্টার্নেশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি। আমার ইনস্টিটিউট ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পক্ষে অংশগ্রহণ করেছিলাম ।
আমি সহ সেখানে আরো তিনজন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছিল ।সেখানে আমাদের দেখিয়েছিল কিভাবে করোনার সময় বাসায় বসে অফিস করা যায় ।ছাত্র-ছাত্রীদের কথা চিন্তা করেই আমরা যে যার অবস্থানে থেকে করোনার কর্মক্ষেত্র শুরু করি। হোম অফিসের মাধ্যমে যে যার বাসায় অবস্থান নিয়ে কম্পিউটার ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস নেওয়া শুরু করি।
গুগলকে বলতে হয় লিডারের ভূমিকা পালন করে আসছে, গুগোল মিট নামে একটি টু যা দ্বারা ক্লাস নেওয়া শুরু করি । মিটকে কাজে লাগিয়ে সারা পৃথিবীতে মানুষ তার মিটিং সিটিং এবং ক্লাসের পরিচালনা করে আসছে।আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের কে নিয়ে একটি মিটে ক্লাস করার উদ্যোগ নিয়েছি । গুগল ক্যালেন্ডারে রুটিন মোতাবেক ক্লাস সেট করে প্রত্যেকটা স্টুডেন্ট ইমেইল এড্রেসে মিটিং লিঙ্কটা প্রেরণ করার ফলে, তারা যার যার অবস্থান থেকে এই ভার্চুয়াল ক্লাসে এটেন্ড করতে পেরেছে ।
চমৎকার একটি ব্যবস্থা, এটাকে গুগোল ক্লাসরুম অ্যাড করে এর মাধ্যমে আমরা দৈনিক আমাদের যেই লেকচার এবং আমাদের যে মেনুয়াল রুটিন অনুযায়ী সকল ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে যুক্ত এবং আমরা রুটিন অনুযায়ী ক্লাস কন্টিনিউ করতে পেরেছি। করোনার কর্মক্ষেত্র, অনলাইনে এই ক্লাস নেয়ার কৌশল সত্যি চমৎকার ।সারাবিশ্ব যেখানে বন্দী প্রত্যেকেই তার বন্দিদশা থেকে যার যার অবস্থানে থেকে কর্মে যোগদানের সুন্দর পদ্ধতি । দৈনিক সাড়ে আটটায় আগে ঘুম থেকে উঠে লগইন করতাম । অনলাইন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে নয়টার দিকে দিকে আমাদের একটি মিটিং করা হতো , যেখানে সকল টিচার সহ প্রায় ৪০ জনের মতো আমরা শিক্ষক শিক্ষিকা, কর্মচারী কর্মকর্তারা মিলে কর্ম প্লান ঠিক করতাম এবং সে অনুযায়ী আমরা কাজ করে দিতাম । দিনশেষে আমাদের কাজের একটি নথি রিপোর্ট আমাদের করতে হতো। সেটাও গুগলের ড্রাইভে আমাদের সিটের মাধ্যমে জমা থাকে। ছাত্র-ছাত্রীরা ভালোই ভাবে তারা অ্যাটেন্ড করতো, তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া কারণেই আমরা এই ক্লাস কন্টিনিউ করতে পেরেছিলাম। দীর্ঘ ৪০ দিন পরও আমরা ক্লাস কন্টিনিউ করে যাচ্ছি।
গুগোল ও তার বিভিন্ন এক্সটেনশন এর মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রমকে আরো সহজ করে যাচ্ছে গুগোল মিটে এটেনডেন্ট সিস্টেম , চমৎকারভাবে আমাদের ক্লাব নেওয়া এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে ইন্টারেক্ট করার একটি সুন্দর পদ্ধতি তারা করেছে। আমাদের অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে । আমাদের কর্মঘন্টা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে , পাশাপাশি লেকচার গুলি ছাত্র-ছাত্রীরা পুনরায় শুনতে পারবেন এবং হতে পারে এই পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রী এ সময় বাসায় একঘেয়েমিতা থেকে রেহাই পাবে। পাশাপাশি তাদের পড়াশুনাও সঠিকভাবে কন্টিনিউ করতে পারে।
পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে শিক্ষার বিকল্প কিছুই নেই ।পবিত্র কোরআনে প্রতিনিয়ত শিক্ষার জন্য চেষ্টা করতে বলেছেন । আজকে যেই মহামারী, সেটা মানুষেরই তৈরি এর থেকে আল্লাহ চায়তো একদিন হয়তো আমরা সকলেই মুক্তি পাব । তবে তার আগেই মহামারীর প্রতিষেধক আবিষ্কার করে এখন পর্যন্ত মহামারীর কোন প্রতিষেধক সঠিকভাবে কেউই আবিষ্কার করতে পারেনি। আশা করি খুব দ্রুতই এটা আবিষ্কার হবে এবং মহামারী থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।
করোনার কর্মক্ষেত্র, আমি আমার ওয়ার্কস্টেশন কে একটি ল্যাপটপ সামনে একটি মনিটর রেখেছি পাশাপাশি আমার মোবাইলটি আমাকে চমৎকার ভাবে হেল্প করেছে । ইন্টারনেট না থাকলে হয়তো এই মহাযজ্ঞের অসম্ভব ছিল। ইন্টারনেট সার্ভিস আমাদেরকে এ কার্যক্রম চালানোর জন্য সহায়তা করে। মোবাইলের ডাটা নিয়ে হোয়াটস স্পোর্ট এর মাধ্যমে ল্যাপটপ বা পিসির মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হয়। অনেক বেশি সময় দিতে হয়েছে তাতে কোন সমস্যা নেই কিন্তু নিজের উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে, আমি বিশ্বাস করি আমার প্রতিষ্ঠান এবং আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যেককে লাভবান হবে। এ সময় সবাইকে বাসায় থেকে নিজের মনকে শক্ত রেখে এগিয়ে যেতে হবে ।
প্রথম আলো পত্রিকা থেকে কিছু জরুরী তথ্য সংগ্রহ করেছে। প্যানডেমিক এই সময় তথ্যগুলো সবার জানা প্রয়োজন। লকডাউন অবস্থায় মানুষ অত্যন্ত অসহায় হয়ে পরে। অনেক মধ্যবিত্তরা আছেন যারা কারো কাছে হাত পাততে পারেন না, আবার নিজের জন্য কিছু করতেও পারেন না। পরিবারের কথা তো বাদই দিলাম, শেখ হাসিনার সরকার তারপরেও কিছু ব্যবস্থা করে রেখেছে। অনেকে হয়তো এর সুবিধা পাচ্ছে ।অনেকে পাচ্ছে,যাদের সাথে ওয়ার্ড কাউন্সিলর,নেতাদের সাথে একটু সম্পর্ক আছে তারা এই সুবিধা গুলি বেশি ভোগ করছে। তারপরও কিছু হলে তো পাচ্ছে।
করোনার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়ে গিয়েছে, সাত দিনের লকডাউন এ আবারও বাসায় বসে অনলাইন অফিস করা শুরু হয়ে গিয়েছে। চারদিকে করোনার থাবা সবাইকে বিচলিত করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া এখন পর্যন্ত আমি আমার পরিবার নিয়ে করনা থাবা থেকে মুক্ত আছি।
গভমেন্ট অফিস আদালত বন্ধ করে দিয়েছেন তবে কল কারখানা খোলা রেখেছেন যানবাহন খোলা রেখেছেন অর্ধেক মানুষ নিয়ে যানবাহন চলছে। আমি টিকা নিতে চাইনি অথচ প্রতিষ্ঠান চাপাচাপি তে প্রথম ধাপের টিকা নিয়েছি ,পরিবারের অন্যান্যদের এখনো টিকা আর কোন খবর নেই।
No comments
Hi Thanks for Your Valuable Comments