ব্যাকলিংক (Backlink) ওয়েবসাইটে কেন দরকার?
ব্যাকলিংক (Backlink) ওয়েবসাইটে কেন দরকার?
একটি ওয়েবসাইট সঠিক ভাবে এসইও করতে চাইলে ব্যাকলিংক (Backlink) তৈরি করা দরকার। ওয়েবসাইটের সঠিক ব্যাকলিংক (Backlink) দেখে পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যেতে পারে যে, সাইট টি কেমন মানের এবং ভবিষৎ এ কেমন করবে। চলুন জেনে নেই, ব্যাকলিংক (Backlink) ওয়েবসাইটে কেন দরকার?
ব্যাকলিংক (Backlink), এই শব্দটি যারা এসইও জগতে কাজ করি তাদের কাছে অনেক পরিচিত । আসলে আমরা অনেকেই জানিনা যে, ব্যাকলিংক (Backlink) প্রকৃতপক্ষে কি এবং কিভাবে এটি আমাদের সাইটের জন্য কাজ করে এবং সাইটকে গুগল সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজ এ (Search Engine Results Pages (SERP)) এক নম্বর পেজে নিয়ে আসতে সহায়তা করে।
ব্যাকলিংক (Backlink) কি?
ব্যাকলিংক অফপেজ এস ই ও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর দ্বারা নিজের ওয়েবসাইট এর এবং ব্লগের অবস্থান সার্চ ইঞ্জিনে ভালো করা যায়। একটি ওয়েবসাইটের কোয়ালিটি ব্যাকলিংক যত বাড়বে তার ডোমেইন অথরিটি তত বৃদ্ধি পাবে। আর যে ওয়েবসাইট এর ডোমেন অথরিটি যত বেশি সেই ওয়েবসাইট এর গ্রহণযোগ্যতা সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে ততবেশি।
ব্যাকলিংকগুলি (Backlinks) ("ইনবাউন্ড লিঙ্কস", "ইনকামিং লিঙ্কগুলি" বা "ওয়ান ওয়ে লিংক" নামে পরিচিত) হ'ল একটি ওয়েবসাইট থেকে অন্য ওয়েবসাইটের একটি পৃষ্ঠায় লিঙ্ক। গুগল এবং অন্যান্য বড় সার্চ ইঞ্জিনগুলি একটি নির্দিষ্ট পৃষ্ঠার জন্য ব্যাকলিঙ্কগুলি "ভোট" বিবেচনা করে।
ব্যাকলিংক মূলত হচ্ছে একটি ওয়েবসাইটের একটি এক্সটারনাল লিংক (External Link) যা অন্য একটি ওয়েবসাইট থেকে নিজের ওয়েবসাইট টি কে পেয়ে থাকে।
আরো সহজভাবে বললে বলা যায়, যখন একটি ওয়েবসাইট আপনার ওয়েবসাইটকে একটি লিংক দেয়।
দুটি ওয়েবসাইট দেখানো হয়েছে। যেখানে আপনার ওয়েবসাইটটিকে অপর সাইট থেকে লিংক করা হয়েছে।
একটি প্রশ্ন আসতে পারে যে, বাইরের ঐ ওয়েবসাইট টি কেন আপনার ওয়েবসাইট কে ব্যাকলিংক দিবে?
একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি ক্লিয়ার করা যাক , মনে করুন আপনার এক বন্ধু আপনার কাছে জানতে চাইলো যে সে কিভাবে এসইও শিখতে পারে। আর আপনি তাকে বললেন যে, YouTube এ ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (Daffodil Polytechnic Institute) এর Chaannel দেখো, তাহলে ভালোভাবে এসিও শিখতে পারবে।
একটু ভেবে দেখুন এখানে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (Daffodil Polytechnic Institute) কিন্তু আপনাকে বলেনি যে, আপনি আপনার বন্ধুর কাছে Daffodil Polytechnic এর YouTube Chaannel এর ভিডিও দেখার জন্য বলেন। কিন্তু আপনি তাকে বলেছেন, কারন আপনার মনে হয়েছে Daffodil Polytechnic এর YouTube Chaannel এর ভিডিও দেখলে সে সহজেই এসইও শিখতে পারবে।
এই যে আপনার মাধ্যমে Daffodil Polytechnic এর YouTube Chaannel এর একজন ভিউয়ার বা ভিজিটর বাড়লো অর্থাৎ আপনার বন্ধু Daffodil Polytechnic এর YouTube চ্যানেলে আসলো, এটাই ব্যাকলিংক।
এভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে অন্যান্য ওয়েবসাইটে বা ব্লগে নিজের ওয়েবসাইটের URL Address তখন সেই ওয়েবসাইটগুলির এক্সটার্নাল লিংক গুলি হবে নিজের ওয়েব সাইটের ব্যাকলিংক।
নানা প্রকারের ব্যাকলিংক হয়ে থাকে, যেমন-
External Link
Internal Link
Link Juice
Low Quality Links
High Quality Links
Do Follow Link
No Follow Link
ব্যাকলিংক (Backlink) ওয়েবসাইটে কেন দরকার?
বিভিন্ন কারনে একটি ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক করা হয়ে থাকতে পারে।
অথোরিটি বলতে বোঝানো হচ্ছে নিজের ওয়েবসাইটের ভ্যালু বাড়বে।অর্থাৎ , একটু আগেই যে উদাহরন দেয়া হোল তা আর একবার ভাবুন। আপনি যখন আপনার বন্ধুর কাছে Daffodil Polytechnic এর YouTube Chaannel এর কথা বলছেন তখন কিন্তু আপনার বন্ধু Daffodil Polytechnic এর YouTube Chaannel সম্পর্কে একটি ভালো ধারনা লাভ করছে। সুতরাং এতে Daffodil Polytechnic এর YouTube Chaannel এর অথোরিটি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আর যখন আপনার ওয়েবসাইটের বাইরের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে এমন ব্যাকলিংক পাবে, তখন সার্চ ইঞ্জিন ও আপনার ওয়েবসাইটকে গুরুত্ব বেশী দিবে এবং র্যাংক প্রদান করবে।
আর যখন আপনার ওয়েবসাইটি সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করবে তখন আপনার সাইটের অরগানিক ভিজিটর সংখ্যা বাড়বে।
আশাকরি এখন বুঝতে পারছেন যে, কেন একটি ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক প্রয়োজন।
লিংক এর বৈশিষ্ট গুলি কি?
১. নো-ফলো (No-Follow)
নো-ফলো(No-Follow) হচ্ছে একটি HTML Attribute, যা সার্চ ইঞ্জিন বটকে বলে দেয় যে, এই লিংকের জন্য ঐ টার্গেট পেজটিকে সার্চ ইঞ্জিন র্যাংকিং এ যেনো কোনো ভ্যালু দেয়া না হয়।
অর্থাৎ, সার্চ ইঞ্জিন বট আপনার ঐ লিংটিকে আর ফলো করবে না। আর সার্চ ইঞ্জিন বট যদি লিংটিকে ফলো না করে তাহলে ঐ লিংকের মধ্যে দিয়ে কোনো লিংক জুস (Link Juice) পাস হবে না।
লিংক জুস (Link Juice) হচ্ছে একটি লিংকের পাওয়ার, যার মাধ্যমে লিংকে থাকা পেজটি ভ্যালু পেয়ে থাকে।
সাধারনত, ঐ সকল পেজকে আমরা নো-ফলো দিবো যেগুলি খুব বেশী অথোরিটি সম্পন্ন নয়, বা আমাদের অ্যাফিলিয়েট লিংকগুলি নো-ফলো হবে।
নো-ফলো লিংকের উদাহরন:
<a href=”http://www.google.com/” rel=”nofollow”>Google</a>
যারা ওয়ার্ডপ্রেসে কাজ করবেন, তাদের জন্য অনেক ভালো একটি প্লাগিন আছে যার মাধ্যমে খুব সহজেই একটি লিংকে নো-ফলো করতে পারবেন, প্লাগিনটি হল: Rel Nofollow CheckBox
২. ডু-ফলো (Do-Follow)
যদি লিংকের বৈশিষ্ট্য নো-ফলো না করেন তাহলে ডিফল্ট ভাবে লিংকটি ডু-ফলো করা থাকে।
একটি লিংক যদি ডু-ফলো হয়, এর অর্থ হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন বট লিংকের মধ্যে দিয়ে পাস হয়ে টার্গেট পেজে চলে যাবে।
এখন আপনি বলতে পারেন এতে লাভ কি?
হ্যা, লাভ আছে।
সেটি হচ্ছে, আপনার ওয়েবসাইটের লিংক জুস পাস হবে। অর্থাৎ, সার্চ ইঞ্জিন বট এই লিংকের কারনে টার্গেট পেজকে র্যাংক পেতে সহায়তা করবে।
যদিও বা এখানে আরো কিছু বিষয় রয়েছে, শুধু ডু-ফলো লিংক হলেই হবে না, আপনাকে যে পেজটি লিংক দিচ্ছে তার অবস্থানও সার্চ ইঞ্জিনে ভালো হতে হবে। তাহলেই আপনি এমন ডু-ফলো লিংক পেলে লাভোবান হবেন।
ডু-ফলো লিংকের উদাহরন:
<a href=”http://www.google.com/”>Google</a>
ইন্টারনাল (Internal Link) এবং এক্সটারনাল (External Link) লিংক কি?
ইন্টারনাল লিংক (Internal Link): আপনি যখন একটি ওয়েবসাইটের ভিতরের একটি পেজের/পোষ্টের সাথে অপর পেজের/পোষ্টের লিংক করবেন তখন তাকে ইন্টারনাল লিংক বলে। একে Inbound Link ও বলে।
সার্চ ইঞ্জিনে একটি সাইট র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে Inbound Link এর গুরুত্ব অনেক বেশী। কারন, সঠিক ইন্টারনাল লিংকের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের সকল পেজের/পোষ্টের মধ্যে লিংক জুস সঠিক ভাবে পাস হতে পারে। একারনে, ইন্টারনাল লিংক সাধারনত ডু-ফলো (Do-Follow) হয়ে থাকে।
এক্সটারনাল লিংক(External Link): আপনি যখন আপনার ওয়েবসাইটের ভিতরের কোনো পেজের/পোষ্টের সাথে অপর একটি ওয়েবসাইটের পেজের/পোষ্টের লিংক করবেন তখন তাকে এক্সটারনাল লিংক বলে। এর অপর নাম Outbound Link।
যেহেতু, এক্সটারনাল লিংক এর মাধ্যমে বাইরের সাইটকে লিংক দেয়া হয় একারনে এক্সটারনাল লিংক সাধারনত নো-ফলো (No-Follow) হয়ে থাকে। তবে, এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। কারন হাই-অথোরিটি সাইটকে অনেকেই ডু-ফলো লিংক দিয়ে থাকে।
বিষয়টি অনেকটা তেলে মাথায় তেল দেয়ার মতো। যার আছে তাকে আরো দাও।
ভালোমানের ব্যাকলিংক (Backlink) পাওয়ার উপায় কি ?
এটা নিশ্চই বুঝা গেছে যে, একটি ভালো মানের ব্যাকলিংক পাওয়া সহজ কোনো কাজ নয়। এর জন্য ওয়েবসাইটিতে কিছু গুনাবলী থাকতে হবে। যেমন:ওয়েবসাইটি টেকনিক্যাল এরর (Technical Error) ফ্রি একটি সাইট হতে হবে। এখানে টেকনিক্যাল এরর বলতে বোঝানো হচ্ছে:
- Website HTTP Errors
- Mobile friendliness problem
- Site loading speed problem
- Duplicate content
- 404 errors
- Canonical errors
- Duplicate Meta data
- Missing Alt text Tag on Images
আশাকরি ব্লগ টি থেকে আমি আপনাদের ব্যাকলিংক (Backlink) কি এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।
এছাড়াও ব্যাকলিংক (Backlink) ছাডাও ওয়েবসাইট কে গুগল এর প্রথম পেজে আনতে আরো অনেক উপায় আছে । তবে এই উপায়গুলি ফলো করলে আশা করা যায় গুগলের এক নম্বর পেজ এ আসা সম্ভব এবং এটাকে কন্টিনিউ প্রসেসে যদি রাখা যায় তাহলে যে কোন ওয়েবসাইটকে খুব দ্রুত গুগলের এক নম্বরে অবস্থান করা এবং ধরে রাখা সম্ভব। আশা করি, "ব্যাকলিংক (Backlink) ওয়েবসাইটে কেন দরকার?" ব্লগ টি পড়ার পর ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক তৈরী করার ব্যাপারে সবাই সচেতন হবেন এবং প্রতিনিয়ত ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক (Backlink) ক্রিয়েট করে যাবেন
ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকুন
No comments
Hi Thanks for Your Valuable Comments